১) আপনি যেই কাজ পারেন তার উপরে তার উপর ভিত্তি করে, এমন অম্তত ১০ টা প্রোফাইল দেখে নিজের প্রোফাইল সাজাবেন। ছোট Niche এর উপর কাজ শুরু করুন। যেমন : যারা ওয়ার্ডপ্রেস এর কাজ পারেন, ওয়ার্ডপ্রেস এর সব কাজ এর উপর প্রোফাইল না সাজিয়ে শুধু “এলিমেন্টর বিল্ডার” কিংবা “ওয়ার্ডপ্রেস অপ্টিমাইজেশন” এর কাজ গুলোর উপর প্রোফাইল সাজান। এবং অন্তত প্রথম ২০ টি কাজ ওই রিলেটেড কাজের উপর প্রপোসাল পাঠান। তাহলে ছোট niche এ আপনার প্রোফাইল দ্রুত Rank এ আসবে। ইনভাইটেশন পাওয়া শুরু করবেন দ্রুত।
২) আপনার niche এ কাজ করে এমন প্রোফাইল গুলো দেখুন, তারা কিভাবে তাদের প্রোফাইল, পোর্টফোলিও, প্রজেক্ট সাজিয়েছে তা ফলো করুন। এবং নিয়মিত প্রোফাইল ডেসক্রিপশন আপডেট করুন ও প্রোফাইল এ পর্যাপ্ত কীওয়ার্ড ব্যবহার করুন। specialized প্রোফাইল গুলোতেও কীওয়ার্ড সঠিকভাবে পুশ করুন।
৩) নতুন অবস্থায় প্রতিদিন অন্তত ১০ জব পোস্ট পড়বেন যা অবশ্যই আপনার নিশ এর হতে হবে, এবং ডেমো এপ্লিকেশন লিখবেন, সাবমিট করার দরকার নাই, অর্থাৎ ১০ টা কভার লেটার লিখবেন, পাঠাবেন একটি। এটি আপনাকে দ্রুত কভার লেটার লিখায় অভস্থ করে তুলবে, পাশাপাশি ওই সময়ে আপওয়ার্ক প্রোফাইল এ আপনাকে একটিভ দেখাবে। প্রোফাইল ভিউ বাড়ার সম্ভাবনা থাকবে।
৪) ইনিশিয়ালি আপনি অবশ্যই দেখে দেখে ছোট খাটো কাজগুলোতে কিংবা কম বাজেট এর কাজ গুলোতে এবং যে কাজ গুলোতে আর্জেন্ট হায়ারিং হচ্ছে সেই কাজ গুলো তে প্রপোসাল পাঠান। কারণ এই ছোট কাজ গুলোতে বিড কম হবে, আপনার কম্পিটিশন কমে যাবে।
৫) আপওয়ার্ক এ প্রপোসাল পাঠানোর আগে ক্লায়েন্ট এর অ্যাভারেজ আওয়ারলি রেট, লোকেশন, প্রিভিয়াস অ্যাভারেজ রেটিং, প্রিভিয়াস জব হিস্ট্রি ও রিভিউ অবশ্যই দেখে নিন।
৬) যে জব পোস্ট এ ক্লায়েন্ট এর রিকুইরেমেন্ট অনেক বড় থাকে সেগুলোতে প্রপোসাল পাঠান। অনেকেই সময়ের অভাবে এত বড় জব পোস্ট এর রিকুইরেমেন্ট গুলো স্কিপ করে যায়, তাই দেখবেন এই জব গুলোতে প্রপোসাল ও কম জমা পড়ে।
৭) আপওয়ার্ক এ মেম্বারশিপ প্লাস নেয়া থাকলে আপনি প্রতিটি জব এ বিড করার সময় ম্যাক্সিমাম ও মিনিমাম বিড রেট দেখতে পাবেন। অর্থাৎ আপনার আগে যারা ওই জব এ বিড করেছে তাদের ম্যাক্সিমাম ও মিনিমাম বিড রেঞ্জ দেখতে পাবেন। আইডিয়া পাওয়ার পর আপনি দেখুন ক্লায়েন্ট এর বাজেট কত? ফিক্সড প্রাইস এর কাজে ক্লায়েন্ট এর এস্টিমেটেড বাজেট দেখতে পাবেন।
৮) যদি ক্লায়েন্ট এর বাজেট ২০০ ডলার হয়, আপনি ওই কাজ ৫০০-৬০০ ডলার এ বিড করলে ইন্টারভিউ বা ইনবক্স এ knock পাওয়ার চান্স থাকবে না বললেই চলে। ধরা যাক আপনার বাজেট মন মতো হলো না, তারপর ও বিড করার সময় ক্লায়েন্ট এর এস্টিমেটেড বাজেট এর কাছাকাছি এমাউন্ট এ বিড করুন। তারপর ক্লায়েন্ট ইনবক্স এ আসলে আপনি ভিডিও কল এ নিয়ে আসুন, আপনি সুন্দর ভাবে ভিডিও কল এ যদি ক্লায়েন্ট এর সাথে কম্যুনিকেট করতে পারেন, আপনি কি কি ফীচার দিবেন বুঝিয়ে বলতে পারেন, আপনার আগের কাজের স্যাম্পল দেখতে পারেন, ক্লায়েন্ট এর বাজেট এমনিতেই বাড়িয়ে নিতে পারবেন।
৯) একই কভার লেটার বার বার কপি পেস্ট না করে প্রতিটি কভার লেটার আলাদা ভাবে লিখুন, ক্লায়েন্ট যা চাইবে শুধু তার প্রতিটি লাইনের উত্তর দিয়ে যাবেন ক্রিয়েটিভলি, কিভাবে কাজটি করবেন পুরো প্রসেস লিখে ফেলুন কভার লেটার এ। কত সময় নিবেন, কাজের প্রসেস গুলো কি হবে ডিটেল এ লিখুন। পাশাপাশি আপনার আগের করা কিছু সিমিলার কাজের পোর্টফোলিও লিংক অ্যাড করুন প্রপোসাল এর সাথে। এখন আপওয়ার্ক এ পোর্টফোলিও হাইলাইট অপসন চালু করেছে, তা ব্যবহার করুন।
১০) সাধারণত একটা জব পোস্ট করার পর ১৫-২০ মিনিট ক্লায়েন্ট অনলাইন এ থাকে। যদি এই সময়ের মধ্যে বিড করে ফেলা যায় তাহলে কম্পিটিশন কম থাকে, ক্লায়েন্ট এর নজরে পড়ার চান্স ও বেশি থাকে এবং সর্বোপরি হায়ার হওয়ার চান্স বেড়ে যায়। বিশেষ করে নতুন ক্লায়েন্টদের ক্ষেত্রে এই ট্রিকসটি চমৎকার কাজে দেয়। ২০-৫০ জন এপলাই করে ফেলার পর বিড করলে কাজ পাওয়ার সুযোগ যথেষ্ট কমে যায়। কারণ ততক্ষনে অনেক এক্সপার্টরা বিড করে ফেলে, ক্লায়েন্ট এর হাতে যথেষ্ট অপসন চলে আসে। সাধারণত ভোরের দিকে US, UK সহ ভালো ক্লায়েন্টদের জব পোস্ট গুলো আসতে থাকে।
১১) ক্লায়েন্ট এর মেনশন করে দেয়া স্কিল এন্ড এক্সপার্টাইস দেখে নিন :
আপওয়ার্ক এর জব ডেসক্রিপশন এর একটু নিচেই পাবেন ক্লায়েন্ট কি কি স্কিল চাচ্ছে। দেখে নিন আপনার প্রোফাইল এ এই স্কিলসেট গুলো অ্যাড করা আছে কিনা। তাহলে অনেকের মাঝে বা অনেকের পরে বিড করেও আপনি চলে আসতে পারেন টপ এ (বেস্ট ম্যাচ) সেকশন এ। সাধারণত অনেক প্রপোসাল এর মাঝে আপওয়ার্ক ১-২ জনকে বেস্ট ম্যাচ দেখিয়ে সবার উপরে নিয়ে আসে। তবে বেস্ট ম্যাচ আপনার টোটাল ইনকাম, জব সাকসেস স্কোর, টপ রেটেড ব্যাজ ও সেই স্কিল এর কয়টি কাজ করেছেন তার উপরও নির্ভর করে।
১২) বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সার বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও ফিলিপাইন থেকে কাজ করে, আর এই দেশ এর টাইম জোন কাছাকাছি। রাতের দিকে অর্থাৎ রাত ১ তা থেকে সকাল ৬-৭ টা পর্যন্ত টপ রেটেড বা এস্টাব্লিশড ফ্রীলান্সাররা ঘুমিয়ে থাকেন। এই পুরো সময়টা জুড়ে প্রপোসাল পাঠান। একটু পর পর রিলোড দিয়ে জব পোস্ট পড়ুন, কভার লেটার লিখুন, সব কভার লেটার পাঠানোর দরকার নাই। কভার লেটার লিখে মুছে ফেলুন, আপনার পছন্দের ২-৩ টি জব এ প্রপোসাল পাঠান প্রতিদিন।
১৩) ক্লায়েন্ট এর সাথে ইন্টারভিউ তে ভিডিও কল এ আসার চেষ্টা করুন। এবং ভিডিও কল এ ক্লায়েন্ট এর কাজের সম্পর্কে পর্যাপ্ত ইনসাইট প্রদান করুন। বাজেট বলুন ও কতদিন এ কাজ ডেলিভারি দিতে পারবেন তা জানান। আওয়ারলি কাজ গুলোতেও টোটাল কেমন বাজেট লাগতে পারে তা ক্লায়েন্ট কে জানান। পারবেন কিছু সিমিলার কাজের পোর্টফোলিও শেয়ার করুন ক্লায়েন্ট এর সাথে। ভিডিও কল এ আপনাকে অনেক ভালো ইংরেজি বলতে হবে এমন নয়, আপনার ভাঙা ইংরেজি দিয়ে ক্লায়েন্ট কে বুঝতে পারলেই চলবে। মনে রাখবেন ভিডিও কোনভার্সেশন এ কাজ পাওয়ার চান্স ৭০% বেড়ে যায়।
১৪) ক্লায়েন্ট এর অফার পেয়েই কাজ একসেপ্ট করে ফেলবেন না, আগে এ দেখুন কাজটি আপনি শতভাগ পারবেন কিনা। কারণ প্রথম ৫-৮ টি কাজের রেটিং রিভিউ এর উপর আপনার জব সাকসেস স্কোর(JSS) ডিপেন্ড করবে। প্রথমেই জব সাকসেস স্কোর(JSS) কমে গেলে সেই প্রোফাইল নিয়ে আপনাকে ভুগতে হবে।
১৫) আপনার প্রোফাইল এ যথেষ্ট পোর্টফোলিও ও প্রজেক্ট আপলোড করুন। পোর্টফোলিও আপলোড করার ক্ষেত্রে সুন্দর করে মক-আপ তৈরী করে পোর্টফোলিও তৈরী করুন, আর আপনি যত ধরণের কাজ পারেন সব গুলোর উপর আপওয়ার্ক এ প্রজেক্ট দেওয়ার চেষ্টা করুন। আপওয়ার্ক এর প্রজেক্ট ফাইভার এর গিগ এর মতো। তাই প্রপোসাল পাঠানো কিংবা বিড করা ছাড়াই আপনি যথেষ্ট ক্লায়েন্ট এর নক পেতে থাকবেন আপওয়ার্ক এর প্রজেক্ট এর মাধ্যমে। পাশাপাশি আপওয়ার্ক এ ৩০ ও ৬০ মিনিটের কন্সালটেন্সি সেট করুন। চাইলে কিছু প্রজেক্ট এ বুস্ট ফীচার ব্যবহার করতে পারেন।
১৬) আপনার আপওয়ার্ক প্রোফাইল এর Available ব্যাজ ও প্রোফাইল বুস্ট অপসন সব সময় চালু রাখুন। কিছু কানেক্ট খরচ হলেও আপনার প্রোফাইল এর ভিউ ও যথেষ্ট ইনভাইটেশন আপনি পেতে থাকবেন, তাই দ্রুত কাজ পাওয়া অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।
১৭) আপওয়ার্ক এ মেম্বারশিপ প্লাস ব্যবহার করুন, এটি আপনাকে কিছু হিডেন বেনিফিট দিবে। তাছাড়াও কানেক্ট শেষ হয়ে গেলে দ্রুত কানেক্ট কিনুন। কারণ প্রথম মাসের ফ্রি কানেক্ট শেষ হওয়ার পর থেকে আপনাকে কানেক্ট কিনতেই হবে।
১৮) আমাদের অনেকের মধ্যে নতুন অবস্থায় একটি আলসেমি কাজ করে। একদিন সারারাত জেগে প্রপোসাল সেন্ড করি তো ২-৩ দিন ভুলে যাই। এই কাজটি করা যাবে না। অন্তত ২-৩ মাস প্রতিদিন আপনার নতুন আপওয়ার্ক একাউন্ট এ সময় দিন। উপরের স্টেপ গুলো ফলো করুন। ইনশাল্লাহ আপনার আপওয়ার্ক একাউন্ট খুব দ্রুত বুস্ট হবে, প্রতিনিয়ত কাজ আসা শুরু করবে। পর্যাপ্ত ইনভাইটেশন আসা শুরু করলে এমনেই আপনার প্রোফাইল দাঁড়িয়ে যাবে।
১৯) আবার অনেকে প্রতিনিয়ত কাজ আসা শুরু করলে প্রপোসাল পাঠানো বন্ধ করে দেন, আপনি মনে রাখবেন আপনি সফল ভাবে যত কাজ রোল-আউট করতে পারবেন (৫ ষ্টার রেটিং/রিভিউ সহ) তত বেশি কাজ পেতে থাকবেন। কারণ মার্কেটপ্লেস এলগোরিদম-ই হলো এটি। মার্কেটপ্লেস চায় তার ক্লায়েন্ট হ্যাপি থাকুক। তাই প্রপোসাল পাঠানো বন্ধ করা যাবে না।
Thanks
Minhazul Asif
Founder, Codemanbd & Webbattalion