একজন নতুন কিংবা মিড্ লেভেল ফ্রিল্যান্সারের ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে সফল না হওয়ার পেছনে ১০ টি কারণ জেনে নেওয়া যাক :
১. দক্ষতার অভাব:
ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে নির্দিষ্ট স্কিলে দক্ষতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় ফ্রিল্যান্সাররা পর্যাপ্ত দক্ষতা ছাড়া কাজ শুরু করেন, যার ফলে মার্কেটপ্লেসে কাজ পেলেও তা সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারে না।
২. অসম্পূর্ণ প্রোফাইল:
ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে প্রোফাইল হলো আপনার প্রথম ইম্প্রেশন। অসম্পূর্ণ প্রোফাইল, পোর্টফোলিওর অভাব, বা সঠিকভাবে প্রোফাইল বায়ো না সাজানোর কারণে ক্লায়েন্টদের আকৃষ্ট করতে ব্যর্থ হয় অনেক ফ্রিল্যান্সার।
৩. মার্কেটপ্লেসে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে ধারণার অভাব:
অনেক ফ্রিল্যান্সার মার্কেটপ্লেসের প্রতিযোগিতার ধরন সম্পর্কে অবগত থাকেন না। সঠিক পদ্ধতিতে বিড না করা, অপ্রাসঙ্গিক অফার পাঠানো বা কম মূল্য দিয়ে কাজ নেয়ার চেষ্টা আপনাকে অন্যদের থেকে পিছিয়ে দিতে পারে।
৪. কমিউনিকেশন স্কিলের অভাব:
ক্লায়েন্টের সাথে প্রফেশনাল এবং ক্লিয়ারলি যোগাযোগ করতে না পারা সফলতার পথে বড় বাধা। এক্ষেত্রে বিজনেস কমিউনিকেশন ও ইংলিশ কমিউনিকেশন অনেক ইম্পরট্যান্ট। অনেকে ভালো ইংলিশ জানলেও ক্লায়েন্ট এর সাথে নেগোশিয়েশন ও বিজনেস কম্যুনিকেশনে দুর্বলতার কারণে ক্লায়েন্টকে ক্লোস করতে পারে না, বা অর্ডার নিতে পারে না।
৫. নিদৃষ্ট Niche এ অভিজ্ঞতার অভাব:
ফ্রিল্যান্সারদের অনেকেই একাধিক সেক্টর নিয়ে কাজ শুরু করেন কিংবা বড় একটি সেক্টরে সার্ভিস দেওয়া শুরু করেন, কিন্তু কোনো একটি নির্দিষ্ট সেক্টরে ছোট niche এ এক্সপার্ট হওয়ার দিকে মনোযোগ দেন না। এক্সপার্ট স্কিল না থাকলে ক্লায়েন্টরা আস্থা পায় না। যেমন আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস জানেন তাহলে পুরো ওয়ার্ডপ্রেস এর সকল সার্ভিস অফার না করে শুধু ওয়ার্ডপ্রেস স্পিড অপ্টিমাইজেশন কিংবা এলিমেন্টর বিল্ডার কিংবা ল্যান্ডিং পেজ এর সার্ভিস অফার করতে পারেন ও মার্কেটপ্লেসে সেভাবে প্রোফাইল সাজাতে পারেন।
৬. কাজের মানের অভাব:
সময়মতো কাজ ডেলিভার না করা বা নিম্নমানের কাজ ডেলিভারি ক্লায়েন্টদের অসন্তুষ্ট করে এবং ক্লায়েন্টরা ওই প্রজেক্ট এ নেগেটিভ ফিডব্যাক দেয়, যা মার্কেটপ্লেসে ভবিষ্যতে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়। আমি যদি কোনো কাজের ব্যাপারে সন্দিহান থাকে তাহলে অবশ্যই সেই কাজ নেওয়া উচিত নয়।
৭. ধৈর্যের অভাব:
ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়তে সময় লাগে। অনেকেই প্রথম দিকেই হতাশ হয়ে কয়েকমাস চেষ্টা করেই মার্কেটপ্লেস থেকে সরে যান। অথচ কাজ না পেলে নতুন স্কিল ডেভেলপমেন্ট করা বা প্রোফাইলকে আরো প্রফেশনালি সাজানো কিংবা কম্পেটিটর এনালাইসিস করার দিকে মনোযোগ দেয়া উচিত।
৮. বাজেট নিয়ে অযথা দরকষাকষি:
অনেক নতুন ফ্রিল্যান্সার কম দামে কাজ করতে রাজি হন, আবার অনেকে নিদৃষ্ট বাজেটের নিচে কাজ করতে চান না, ক্লায়েন্ট ফিরিয়ে দেন। নতুন অবস্থায় আমাদের ফ্লেক্সিবল বাজেটে কাজ শুরু করা উচিত। প্রোফাইল এ কিছু ভালো রিভিউ নতুন ক্লায়েন্ট পেতে অনেক সহায়তা করে।
৯. সঠিক মার্কেটপ্লেস নির্বাচন না করা:
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে বিভিন্ন ধরণের কাজের জন্য বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ভালো। আবার অনেক মার্কেটপ্লেস নিদৃষ্ট কিছু স্কিল এর জন্য স্যাচুরেটেড। হয়তো অন্য মার্কেটপ্লেসে সেই স্কিল এর পর্যাপ্ত কাজ আছে, সেটি আমরা রিসার্চ না করে কমন কিছু মার্কেটপ্লেসে সবাই চেষ্টা করে যাচ্ছি। তাই আমাদের সঠিক মার্কেটপ্লেস নির্বাচন করা উচিত।
১০. ফ্রিল্যান্সিং ট্রেন্ড সম্পর্কে ধারণার অভাব:
বর্তমান চাহিদা বা ট্রেন্ড (যেমন এআই, ডেটা সায়েন্স) এগুলোকে আমাদের স্কিল এর সাথে ইন্টিগ্রেট করতে হবে। কাজ সহজ করতে যাই উপকারী তা আমাদের গ্রহণ করতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং-এ ব্যর্থতা
মিনহাজুল আসিফ,
সি.ই.ও – কোডম্যানবিডি